বৃদ্ধ বাবার ৩১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ছিনতাইকারীর সঙ্গে আঁতাত

 

বৃদ্ধ জয়নাল মিয়া ও তাঁর স্ত্রী হনুফা বেগমকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের তিন ছেলে। এরপর জয়নাল মিয়া তাঁর বসতবাড়ির দুই কাঠা জমি ৩১ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। বাবার জমি বিক্রির সেই টাকা ছিনিয়ে নিতে জয়নাল মিয়ার তিন ছেলে হাত মেলান ছিনতাইকারীর সঙ্গে। ছিনতাইকারী জয়নাল মিয়াকে কুপিয়ে তাঁর কাছ থেকে ৩১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন। দুই মাস আগে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানার মানিকদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর মিরপুর এবং গাজীপুর থেকে জয়নাল মিয়ার তিন ছেলে আবদুল হানিফ, আবদুল হান্নান ও আবদুল মান্নান এবং তাঁদের সহযোগী সোহেলকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ২৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ডিবি পুলিশ জানায়, রাজধানীর মানিকদী এলাকায় বৃদ্ধ জয়নাল মিয়ার বসতভিটা। স্ত্রীসহ সেখানেই থাকেন তিনি। ছেলেদের স্ত্রীরা বাবা-মাকে পছন্দ না করায় তিন ব্যবসায়ী ছেলে দুজনকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। সন্তানেরা মারধর করার পর জয়নাল মিয়া ও হানুফা বেগম একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন।


গত ২৮ জুন জয়নাল মিয়া বসতভিটার জমি বিক্রি করেন। জমি বিক্রির টাকা ব্যাগে নিয়ে রাইড শেয়ারিং সেবা পাঠাওয়ের মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন। একপর্যায়ে মানিকদীতে বাসার কাছে পৌঁছালে আবদুল হানিফ তাঁর অপর দুই ভাইকে নিয়ে মোটরসাইকেলের পেছনে বসা জয়নালকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করলে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। এ সময় জয়নালকে তাঁর জামাতা রক্ষা করতে এলে পিটিয়ে তাঁর পা ভেঙে দেন তাঁরা। একপর্যায়ে বৃদ্ধ মা এগিয়ে এলে তাঁকেও বেধড়ক পেটান সন্তানেরা।


আহতদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবির গুলশান বিভাগ।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবি গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, জয়নাল মিয়ার টাকা ছিনিয়ে নিতে তাঁর তিন ছেলে ছিনতাইকারী সোহেলসহ দুজনের সঙ্গে আঁতাত করেছিলেন। অপর ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


মশিউর রহমান জানান, আদালতের অনুমতিতে গ্রেপ্তার চারজনকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ২৯ লাখ টাকা বৃদ্ধ জয়নালের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। টাকা ফিরে পেয়ে খুশিতে তিনি কেঁদে ফেলেন। জয়নাল মিয়ার তিন ছেলেসহ গ্রেপ্তার চার ব্যক্তি বলেছেন, ছিনতাই করা টাকার বাকি দুই লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে।




Post a Comment

0 Comments